মোশাররফ করিমের জীবনী | Mosharraf Karim Biography

কে এম মোশাররফ করিম (K M Mosharraf Karim):

বন্ধুরা আজকে যার কথা বলবো তিনি বাংলাদেশের খুব বড়ো একজন কমেডিয়ান এবং দুর্দান্ত একজন অভিনেতা। বাংলাদেশের টেলিফিল্ম এবং নাটক যারা দেখে অভ্যস্থ তারা এনার সাথে আগে থেকেই চেনেন । তিনি হলেন মোশাররফ করিম (Musharraf Karim)। তো চলুন বন্ধুরা আজ তার জীবনের অজানা কিছু তথ্য নিয়ে আলোচনা করা যাক –

Musharraf Karim

মোশাররফ করিম-এর পরিচয়:

কে এম মোশাররফ করিম যাকে বাংলাদেশের সকলে মোশাররফ করিম (Mosharraf Karim) নাম চেনেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২২ শে আগস্ট বাংলাদেশের ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি বরিশালের গৌরনদী থানার পিঙ্গলাকাঠী গ্রামে। বাবার নাম ছিল কে এম আব্দুল করিম। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। মোশারফ ঢাকা কলেজ, বরিশাল সরকারি কলেজে লেখাপড়া করেছেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (Graduate)।

মোশাররফ করিম-এর ক্যারিয়ার:

১৯৮৯ সালে, তিনি তারিক আনাম খানের উদ্যোগে একটি অডিশনে অংশগ্রহণ করেন এবং সেখানে ১৪০০ জন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৫ জনকে নির্বাচিত করা হয় এবং থিয়েটারে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। করিম তাদের মধ্যে একজন। এরপর তিনি থিয়েটার ” নট্টোকেন্দ্র “-তে যোগ দেন এবং একটানা ১৬ বছর সেখানে কাজ করেন। থিয়েটারে এক দশকেরও বেশি সময় পর, করিম ১৯৯৯ সালে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় ফেরদৌস হাসান পরিচালিত একক-পর্বের টিভি নাটক “অতিথি” -র মাধ্যমে এবং এই নাটকটি চ্যানেল আই- এ প্রচারিত হয়েছিল।

এছাড়াও, তিনি খ্যাতিমান টিভি পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সাথেও কাজ করেছেন। নাটকে তার পুরোপুরি যোগদান হয় ২০০৪ সালে। তিনি বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন যার জন্য তিনি প্রচুর সাফল্য পান। এরপর তিনি জনপ্রিয় ধারাবাহিক ভবের হাট, ঘর-কুটুম-এ অভিনয় করেন। এছাড়াও তিনি জিম্মি, দুই রুস্তম, অন্তনগর, সাদা গোলাপ, ৪২০, জুয়া, সুখের অসুখ, ফ্লেক্সিলোড, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, আউট অফ নেটওয়ার্ক, সিরিয়াস কথার পরের কথা, সন্ধান চাই, ঠুয়া, লস, সিটি লাইফ, বিহাইন্ড দ্যা সিন, তালা এছাড়াও আরো অনেক নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে হাউজফুল নাটকে অভিনয়ের জন্য তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ পুরুষ টিভি অভিনয়শিল্পী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।

মোশাররফ করিম নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেন রচিত উপন্যাস অবলম্বনে তৌকির আহমেদ নির্মিত “জয়যাত্রা” চলচ্চিত্রে একজন ময়রার চরিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে তিনি রূপকথার গল্প (২০০৬), দারুচিনি দ্বীপ (২০০৭), থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার (২০০৯), প্রজাপতি (২০১১), টেলিভিশন (২০১৩), জালালের গল্প (২০১৫), এবং অজ্ঞাতনামা (২০১৬), হালদা (২০১৭), কমলা রকেট (২০১৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এগুলি ছাড়াও তিনি আরো অনেক নাটক এবং চলচিত্রে অভিনয় করেছেন যেগুলি দর্শকরা খুব পছন্দও করেছে।

চার বছর প্রেমের পর ২০০৪ সালের ৭ই অক্টোবর রোবেনা রেজা জুঁই (Robena Reza Jui) ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মোশাররফ। জুঁইও একজন নাট্য অভিনয় শিল্পী। তার সন্তানের নাম রবেন রায়ান করিম (Roben Rayan Karim)। মোশারফের ঢাকা শহরে একটি বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট থাকেন, যার আনুমানিক মুল্য ১২ কোটি টাকার কাছাকাছি। এছাড়া তার ঢাকার বাইরেও বাড়ি আছে। তার মোট নগদ সম্পদের পরিমান প্রায় ৯৫ কোটি টাকা। তিনি নাটক প্রতি ১ লাখ টাকা এবং সিনেমা প্রতি ১.২০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন।

মোশাররফ করিম তার দুর্দান্ত অভিনয়ের কারণে অনেকগুলি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারও পেয়েছেন। কমলা রকেট চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনয়শিল্পী বিভাগে পুরস্কারের জন্য ঘোষিত হন, কিন্তু এই চলচ্চিত্রে তার চরিত্রটি কৌতুক চরিত্র নয় দাবী করে এই পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।

Leave a Comment