চাঁদে কী ইতিহাস গড়তে পারবে ভারত?
মহান বিজ্ঞানীদের সমর্থন পেলে চাঁদের বুকে ইতিহাস গড়বে ভারত। রাশিয়ার বিমানটি অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তি যুক্ত থাকার সত্ত্বেও তারা ইতিহাস তৈরি করতে পারেনি। আর কিছুক্ষন মাত্র অপেক্ষা এটা দেখার যে ভারত সেই ইতিহাস গড়তে সক্ষম হয় কি না। ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৬.০৪ মিনিটে চাঁদের জমিতে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan-3) ল্যান্ড করবে, সময় এবং তারিখ নোট করুন। ISRO এ সম্পর্কে জানিয়েছে চাঁদের অনেক ছবি বেরিয়ে এসেছে যা দেখতে খুবই সুন্দর এবং রোমাঞ্চকর।
চন্দ্রযান-৩ এর অবস্থান
শুধুমাত্র চাঁদ থেকে পঁচিশ কিলোমিটার দূরত্বে চন্দ্রযান-৩ অবস্থান করছে। ISRO আগে যে ছবি প্রকাশ করেছিল তা ৭৫ কিলোমিটার উপরে এল পিডিসি সাহায্য থেকে ল্যান্ডার পজিশন নেওয়া হয়েছিল ডিটেকশন সেন্টার, ক্যামেরার সাহায্যে এসব ছবি তোলা হয়েছিল এবং এখন চাঁদ এবং চন্দ্রযান-৩ এর মধ্যে দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। চাঁদের পড়ে থাকা গর্তগুলো খুবই বড়ো বড়ো হওয়ায় বর্তমানে চাঁদে কোন জায়গায় অবতরণ ঘটবে তা খোঁজার চেষ্টা চলছে। ইতিহাস তৈরির জন্য এই ল্যান্ডিং টা হওয়া খুব দরকার কারন আর মাত্র পঁচিশ কিলোমিটার দূরত্ব বাকি রয়েছে। সুনিতা উইলিয়াম জি একজন খুব বড়ো বিজ্ঞানী যিনি খুব খুশি হয়েছিলেন আর বলেছিলেন, আমি খুব খুশি যে ভারত গবেষণায় এত বেশি সামনের এগিয়েছে, সারাদেশ থেকে এমন ছবি আসছে যেখানে মানুষ পূজো করেছে, যজ্ঞ করছে এই উদ্দেশ্য সফল হওয়ার প্রার্থনায়। কিন্তু এই মুহূর্তে এটা খুব স্পেশাল হয়ে গেছে। সফট ল্যান্ডিং এর ১৫ মিনিট খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই ১৫ মিনিটকে দেশপ্রযুক্তিগত ভাষায় বলা হয় ১৫মিনিটের সন্ত্রাস। মানে এই ১৫ মিনিট যদি আমাদের চন্দ্রযান-৩ সঠিক থাকে তাহলে কোন সমস্যা হবে না এবং ল্যান্ডারটি যখন দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে, ভারত হবে প্রথম দেশ যে চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় করবে।
চন্দ্রযান-৩ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মত
অবতরণ করার পর সেখান থেকে অনেক কিছু জিনিস করবে চন্দ্রযান-৩ কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা যা বলছেন আমাদের মধ্যে যে ভয়টা আছে তা সবকিছু ব্যর্থ হয় তাহলেও ল্যান্ডার সেখানে অবতরণ করবে। এমনটাই দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন সব সেন্সর ব্যর্থ হলেও এমনকি যদি কিছুই কাজ নাও করে, শুধুমাত্র অ্যালগরিদম সুস্থ থাকলে চাঁদে নামবে চন্দ্রযান-৩। মানে এবারের প্রস্তুতিটা এমনভাবে করা হয়েছে যে দুটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হলেও অবতরণে কোনো সমস্যা হবে না। যদি অবতরণটি সফল হয়, তবে এটি একটি গর্বের মুহূর্ত হবে।
রাশিয়ার লুনার 5 (Luna 5) ফ্লপ হয়েছে। আমাদের চন্দ্রযান রাতে কাজ করার ক্ষমতা শক্তি নেই শুধু দিনেই কাজ করবে যেটা রাশিয়ার লুনার 5 এ ছিল রাতে কাজ করার ক্ষমতা কিন্তু সেটা ধ্বংস হয়ে গেছে। চাঁদে অবতরণের সময় চন্দ্রযান 3 এর ক্রিয়াকলাপ শেষ পনের মিনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদ ও ভারতের মধ্যে দূরত্ব ৩ লাখ ৮৩ হাজার কিলোমিটার। বিজ্ঞানীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শেষ ১৫ মিনিট গুরুত্বপূর্ণ কারণ ১৫মিনিট কথায় ছিল সন্ত্রাসের মিনিট। এর কারণ হলো শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডার গ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে তাই তাকে নিজেকেই কাজ করতে হবে। এখনো পর্যন্ত ইসরো এখান থেকে পরামর্শ দিচ্ছে কিন্তু সেই মুহূর্তে নির্দেশ দেওয়া সম্ভব হবে না। যে অ্যালগরিদম আছে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং প্রায়শই এতে ইঞ্জিন ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।যদিও আমাদের দুটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হলেও তারপরও আমাদের ল্যান্ডার সহজেই অবতরণ করতে পারবে এটা নিশ্চিত করা হয়েছে। চাঁদে এত বড় বড় গর্ত আছে যাতে একটা পাহাড় ঢুকে যাবে। তাই সঠিক জায়গা খোঁজা, সঠিক সময় দেখে অবতরণ করা এটা একটা টেকনিক্যাল প্রসেস। বাকি সন্ধ্যে ৬ টায় বোঝা যাবে যখন চন্দ্রযান ৩ অবতরণ করবে। এখন এটাই প্রার্থনার যে শেষ পনেরো মিনিট যেটা সন্ত্রাসের ১৫ মিনিট বলে থাকি তখন ভগবান যেন আমাদের সাথ দেয়। তারপর তো ভারতের জয়জয়কার হয়ে যাবে দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা প্রথম দেশ হিসাবে। ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৬.০৪ মিনিট চন্দ্রযান ৩ ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে।
